- Back to Home »
- পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় স্থান বারেকটিলা ও যাদুকাটা
Posted by : Mohiuddin
Monday, July 30, 2012
তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড় ঘেঁষে অবস্থিত
বারিক টিলা ও পাশ দিয়ে প্রবাহিত পাহাড়ি নদী যাদুকাটা যেন নৈসর্গিক
সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বর্ষায় পাহাড়ি নদী যাদুকাটার বুকে স্রোতধারা আর
হেমন্তে শুকিয়ে যাওয়া যাদুকাটার বুক জুড়ে ধু-ধু বালুচর এবং পার্শ্বস্থ
ভারতের সারি-সারি উচু-নিচু মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড় ও বাংলাদেশের
বারিকটিলার সবুজ বনায়ন মাটিয়া পাহাড় এখানে আসা লোকজনের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। এ
দুই নান্দনিক নৈসর্গিকতার পাশাপাশি তাহিরপুরের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে
রয়েছে যাদুকাটা ও বারিকটিলার পূর্বপ্রান্তে ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফরসঙ্গী
শাহ আরেফিনের আস্তানা, যাদুকাটা নদী তীরে লাউর নবগ্রাম শ্রী-শ্রী অধৈত
প্রভুর মন্দির ও পনতীর্থ ধাম, পশ্চিমতীরে ইস্কন মন্দির বোত্তাশাহর মাজার,
বড়ছড়া কয়লা ও চুনাপাথর শুল্কস্টেশন, ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্প,
আওলি জমিদার বাড়ি, রামসা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত বিশাল টাঙ্গুয়া হাওরের
জলাভূমি এবং বনভূমি উল্লেখযোগ্য। বারিকটিলার উপর দাঁড়ালে একদিকে চোখে পড়ে
হাওর ও অন্যদিকে সারি সারি পাহাড়। এ মনোরম দৃশ্য যে কারোরই মন কেড়ে নেয়
সহজেই। জেলা শহর সুনামগঞ্জ থেকে ২০ কিলোমিটার এবং তাহিরপুর উপজেলা সদর
থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ বারেকটিলা ও যাদুকাটা নদী। যাদুকাটা ও
বারেকটিলার নয়নাভিরাম দৃশ্যকে নিয়ে রয়েছে পর্যটন শিল্পের এক উজ্জ্বল
সম্ভাবনার হাতছানি। যাদুকাটা যেমনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে শোভামণ্ডিত
করেছে এলাকার নান্দনিকতা তেমনি যাদুকাটার বালি ও পাথর উত্তোলন করে জীবিকা
নির্বাহ করে আসছে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক। আর এ যাদুকাটার বালি ও পাথর দেশের
অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট ও ইমারত নির্মাণে বিরাট অবদান রেখে আসছে। বর্ষায়
স্রোতস্বীনি যাদুকাটায় ঢল নামার সঙ্গে নদী দিয়ে ভেসে আসা গাছপালা জ্বালানি
কাঠ হিসেবে সংগ্রহের জন্য মহানন্দে নদীতে নেমে পড়ে নদী তীরবর্তী এলাকার
হাজার হাজার লোকজন। লোকমুখে শোনা যায় বিলুপ্তপ্রায় মহাশোল মাছের প্রজনন
কেন্দ্রস্থল যাদুকাটার উত্সমুখ। জেলার রাজস্ব আয়ের অন্যতম উপজেলা মত্স্য,
পাথর, ধানসহ প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর থাকলেও আজও স্বাধীনতার ৪০বছর
পড়েও যাতায়াতের সুষ্ঠু ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি!
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হলে এবং উল্লিখিত স্থানগুলো যথাযথভাবে
তত্ত্বাবধান করা হলে বারিকটিলা ও টাঙ্গুয়ার হাওরকে দেশের অন্যতম পর্যটন
কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।